নিজস্ব প্রতিবেদক: অনন্যা আবাসিক এলাকায় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে ফটোগ্রাফার শাওন বড়ুয়া (২৫) হত্যা মামলার পুলিশের টানা অভিযান ৫ জনকে গ্রেফতার করে চান্দগাও থানা পুলিশ।
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারী) বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের কে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন ইমতিয়াজ আলম মুরাদ (২১), আশহাদুল ইসলাম ইমন (২৪), তৌহিদুল আলম (২৩), মো. বাহার (২২) ও মো. আলমগীর (৩০)। তাদের মধ্যে মুরাদ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত এবং ইমন ক্যামেরা ছিনতাইয়ের মূল পরিকল্পনাকারী।
সিএমপির অতিরিক্ত উপ–কমিশনার (উত্তর) পংকজ দত্ত বলেন, নিহত শাওনের মতো গ্রেপ্তার ইমনও ফটোগ্রাফি করেন। তার একটি ডিজিটাল ক্যামেরার শখ জাগে। বিষয়টি তিনি তার বন্ধু তৌহিদকে জানান। তারা এলাকার বড় ভাই বাহারকে বিষয়টি খুলে বলেন। বাহারসহ মিলে তারা ক্যামেরা ছিনতাইয়ের ফন্দি আঁটেন। সেখানে তারা যুক্ত করেন সিএনজি টেঙিচালক আলমগীর ও মুরাদকে। তারা প্রথমে কয়েকটি ফেসবুক পেইজে যোগাযোগ করেন বিয়ে বাড়িতে ফটোসেশন করার জন্য। অনেকেই তাদের আহ্বানে সাড়া দেয়নি। একপর্যায়ে জনি বড়ুয়া নামে এক ফটোগ্রাফার সাড়া দেন। তিনি শাওন বড়ুয়ার সঙ্গে তাদের যোগাযোগ করিয়ে দেন। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ইমন গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে ছবি তোলার কথা বলে সাড়ে সাত হাজার টাকায় শাওনের সঙ্গে চুক্তি করেন। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ৫০০ টাকা অগ্রিমও পাঠিয়ে দেন। কথামত শাওন গত সোমবার রাতে কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকায় যান। সেখান থেকে শাওনকে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে নেয়ার কথা বলে অনন্যা আবাসিক এলাকায় নিয়ে যান মুরাদ। মুরাদ শাওনের মোটরসাইকেলে করে এবং ইমন ও বাহার একটি টেঙি নিয়ে সেখানে পৌঁছায়। অনন্যা আবাসিক এলাকায় নেয়ার পরপরই শাওনের কাছ থেকে মুরাদ ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে মুরাদ শাওনের উরুতে ছুরিকাঘাত করে। পরে শাওন মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। সে সুযোগে মুরাদ একের পর এক শাওনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ৭টি ছুরিকাঘাত করে। পরে মুরাদ বিষয়টি বাহারকে বলে, ভাই আমি শাওনকে মেরে ফেলেছি। তখন বাহার এসে ক্যামেরাসহ মুরাদকে নিয়ে পালিয়ে যায়। শাওনের মোবাইলটি সেখানেই ফেলে যায়। ধস্তাধস্তির সময় হাত থেকে খুলে পড়া মুরাদের ঘড়িটিও নিতে ভুলে যায় তারা।
অতিরিক্ত উপ–কমিশনার (উত্তর) পংকজ দত্ত বলেন, শাওনকে যে দোকানের মোবাইল থেকে টাকা পাঠানো হয়েছিল গত মঙ্গলবার বিকালে দোকানটি শনাক্ত করা হয়। কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকার দোকানটিতে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ইমনকে দেখা যায় টাকা পাঠাতে। পরে কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকা থেকে ইমনকে আটকের পরই অন্যদের আটক করা হয় এবং বাহারের বাসা থেকে ছিনতাই করা ক্যামেরাটি উদ্ধার করা হয়।